এমন কিছু মানুষ আছে যারা কথায় কথায় ‘ধুর শালা’ বলতে না পারলে কথা বলাই যেন হয় না। আবার এমন অনেকই আছেন যারা নাকের ময়লা পরিস্কার করাটাকে একবারে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আমার এক আঁতেল বড় ভাই আছেন যিনি সিগারেট কিংবা বিড়ি খাওয়া ছাড়া কোন বয়ান দিতে পারেন না। এই রকম কত বদঅভ্যাস বা মুদ্রাদোষ যে আমাদের আছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। সে দিন এক রেস্তুরায় বসে চা খাচ্ছিলামম হঠাৎ দেয়ালের দিকে চোখ পড়ল। দেখলাম সেখানে লিখাঃ- “আপনি যদি সিগারেটের ছাই চায়ের কাপে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তবে বেয়ারাকে বলুন আ্যাশট্রেতে করে আপনাকে চা দিতে। লেখাটা দেখে কিছুটা অবাক হলেও রেস্তুরার মালিকের বুদ্ধির তারিফ করলাম মনে মনে। এই বদভ্যাসের না হয় একটা সামাধান খুঁজে পাওয়া গেল, কিন্তু আজ কালকার যুগের অতি আধুনিক মেয়েদের উত্তরাধুনিক বদভ্যাসের কি হবে?
এমনই এক উত্তরাধুনিক মেয়েকে তার বাবা বোঝাচ্ছিলেনঃ- এসব বাজে অভ্যাস ত্যাগ করো, আজ তোমাকে দেখলাম ড্রইংরুমে এক অচেনা ছেলের সাথে খুবই আপত্তিজনক ভাবে বসেছিলে। এসব যেন আর না দেখি। শুনে মেয়ে ঝটপট উত্তর দিল- তুমি নিঃশব্দে হাঁটাচলা বন্ধ কর, তাহলে আর দেখতে হবে না। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কিন্তু বদভ্যাস বাড়বে বই কমবে না। কিন্তু একই ব্যাপার আরেক মহিলার ক্ষেত্রে বিশাল প্রকট, তিনি কবরস্থানে একটি কবরে আপনমনে পাখা দিয়ে বাতাস করছিলেন। তখন কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এক লোক থমকে দাঁড়ালেন, তিনি ভদ্রমহিলাকে প্রশ্ন করলেনঃ- কার কবর এটা? আমার স্বামীর, চটপট জবাব দিলেন মহিলা। শুনে ভদ্রলোক বললেন বাহ্ ! প্রেমের এমন দৃষ্টান্ত আমি এই প্রথম দেখলাম। বেঁচে থাকতেও সেবা করেছেন এখন মৃত স্বামীকেও একই ভাবে সেবা করে চলেছেন, সত্যি অসাধারন। মহিলা যেন একটু লজ্জিত হলেন। নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন- আসলে ঠিক তা নয়। বিষয় হলো আমাদের গোত্রে স্বামীর কবর শুকানোর আগ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিয়ের নিয়ম নাই! এবার অবস্থা বুঝুন। বিবাহিত লোকজন স্বামী বা স্ত্রী মরার পরপরই দ্বিতীয় বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা হতেই পারে। কারন এনারা একজনের গলায় ঝুলে পড়লেই হলো। উত্তরাধুনিক যুগের বাসিন্দা বলে কথা। তাই তাদের কথা বাদ। কিন্তু ছেলেরা ন্যাড়া হয়ে দুইবার কেন বেলতলায় যায় সেটা অনেকের কাছেই বোধগম্য হবার কথা নয়।
এই বিষয়ক একটা জোকস্ মনে পড়ে গেল। বনের রাজা বাঘের বিয়ে, পুরো বনে তা নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ, সবাই আনন্দ করছে। ইঁদুরও আনন্দ করছিল। কিন্তু ইঁদুরের আনন্দটা একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছিল। সে সারা দিন জুড়েই নাচানাচি করছিল। তা দেখে শিয়াল প্রশ্ন করলো- কী ব্যাপার ভায়া? তোমার এতো আনন্দ কি কারনে? ইঁদুর বলল- বাঘের বিয়ে হচ্ছে। আমাদের জাত ভাই বাড়ল। শিয়াল অবাক হয়ে বলল-কিন্তু সেতো বাঘ আর তুমি ইঁদুর। ইঁদুর হেঁসে জবাব দিল- সবই ঠিক আছে, কিন্তু বিয়ের পর সব বাঘই ইঁদুর হয়ে যায়। তাই মেয়েদের বেলায় পুনরায় বিয়ে করাটা উত্তরাধুনিকতা হলেও, ছেলেদের বেলায় নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা ছাড়া আর কিছুই না। এই ব্যাপারে বলার জন্য অবশ্য আমার গালি খাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয় বরং ১০০ পারসেন্টের চেয়ে পোনে ২০০ পারসেন্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আবার কিছু কিছু ম্যাডামদের খুঁজে পাওয়া যায় যারা বিউটি পার্লার থেকে দুই তিন ইঞ্চি পুরো মেকাপ না দিলে তাঁদের পেটের ভাত হজম হয় না। এমনই এক মর্ডান মা তার ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হল, বুষ্টিতে মায়ের সব মেকাপ ধুয়ে গেল। বৃষ্টি থামার পর ছেলেটি তার মায়ের দিকে তাকালো এবং কান্না শুরু করে দিল। মা বললঃ- কাঁদছ কেন? কি হয়েছে? কান্নার স্বরে ছেলে বলল, আমার মা কোথায়? আমি মার কাছে যাবো।
বদভ্যাসের লাগাম টানা সত্যি কঠিন আর সেটা যদি হয় বিড়ি সিগারেট বা মদের মতো তাহলেতো কাহিনী আরো খারাপ। এমনই এক মাতাল মদ কেনার জন্য তার বউ কে বিক্রি করে দিল। মদ খেয়ে প্রায় ঘন্টাখানেক পর সে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। কান্না দেখে এক পথচারী দাঁড়ালো এবং কান্নার কারন জানতে চাইলোঃ- মতাল বলল- মদ খাওয়ার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে বিক্রি করে দিয়েছি। আমি তাকে ফেরত চাই। তখন সেই লোক বলল- তা মানে এখন তুমি অনুতপ্ত? তখন মাতাল বলল-হাঁ আমার আবার মদের নেশা পেয়েছে। আসলে বউকে ফিরে পাবার জন্য নয় মদের নেশাটাই তার কাছে মূখ্য। অবশ্য এক্ষেত্রে বর্তমান যুগের স্ত্রীদের অসামান্য অবদানের কথা না বললেই নয়। কারন সব পুরুষ মানুষেরই ধারনা তাঁরা দুই প্রকার জীবিত আর বিবাহীত। এবার শেষ আরেকটা গল্প বলা যাক। প্রতিবেশি ভদ্রলোক আরেক ভদ্রলোককে সাবধান করে দিয়ে বলছেঃ- বউকে আদর করার সময় দরজা জানালা বন্ধ করে নিও। একবারে হুঁশ না থাকলে কি চলে। কালতো ব্যাপারটা আমার চোখে পড়ে গেল। দ্বিতীয় ভদ্রলোক অবাক হয়ে বললেন আমিতো গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতেই ছিলাম না, আপনি কাকে দেখলেন। এখন প্রশ্ন হলো এই ঘটনাটা কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে উত্তরাধুনিকতার আরেক বড় কুসংস্কার-পরকীয়ার না এই আধুনিক যুগের অন্য কোন উত্তরাধুনিক সংস্কৃতির, প্রশ্নটা করে বিদায় নিলাম আজকের মত, হয়ত ফিরে আসবো আগামিতে অন্য কোন রম্য নিয়ে।
বিঃ দ্রঃ ইহা একটি রম্য রচনা, কারো জীবনের সাথে মিল খাইলে আমি পাগল দায়ী নই। আর জানেন তো পাগলে কিনা বলে। সবাই ভাল থাকুন, শুভ কামনা রইল।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
১১ ডিসেম্বর - ২০১৫
গল্প/কবিতা:
২ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।